ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৯ জনের মৃত্যু মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ শ্রীপুরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে থানার এএসআই ক্লোজড সাঘাটার ভূমিদস্যু সুইট ও সহযোগীদের শাস্তির দাবি ফুলবাড়ীতে প্রতিপক্ষের গাড়ি ভাঙচুর ও মারপিট ৩১ শয্যার হাসপাতালে ২২ পদ শূন্য, ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেননি ডিসি আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা বান্দরবানে হত্যা মামলা তুলে নিতে হুমকি আমতলীতে ৫০ শয্যা হাসপাতালে ২২জন স্টাফদের মধ্যে১৬ জনের শুন্যপদ থাকায় চিকিৎসাসেবা ঝুঁকে পরছে হেরা ফেরি ৩-তে ফিরছেন টাবু বাশার-তিশার নতুন রোমান্সের গল্প ‘বসন্ত বৌরি’ ওজন কমাতে সার্জারি, প্রাণ গেল মেক্সিকান ইনফ্লুয়েন্সারের ‘স্কুইড গেম’ অভিনেত্রী লি জু-শিল আর নেই বিচ্ছেদের পর ফের নতুন প্রেম খুঁজছেন মালাইকা অরোরা? দেশের প্রেক্ষাগৃহে ‘বলী’ আসছে ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার পর প্রথমবার জনসমক্ষে সাইফ আলী খান অবশেষে প্রকাশ্যে এলো চিত্রনায়িকা পপির স্বামী-সন্তানসহ ছবি

চাল নিয়ে চালবাজি!

  • আপলোড সময় : ০১-০২-২০২৫ ১১:৪২:৪৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০২-২০২৫ ১১:৪২:৪৭ পূর্বাহ্ন
চাল নিয়ে চালবাজি!
* ১৫ দিনের ব্যবধানে ৫০ কেজি বস্তা প্রতি ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে
* দায়সারা তদারকিতে বহাল মিলাররা, ধরাশায়ী ভোক্তা
* করপোরেট মজুতদারিতে চালের বাজারে সংকট


রাজধানীসহ দেশজুড়ে হঠাৎ অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারেই প্রতি বস্তা (৫০ কেজি ওজনের) চালে ১৫ দিনের ব্যবধানে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর শেষ সপ্তাহে বস্তাপ্রতি কমেছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। ফলে বাজারে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল কিনতে প্রতি কেজিতে দাম দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। সরু চালের দাম গত এক মাসে কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা বেড়েছে। বেড়েছে মোটা ও মাঝারি চালের দামও। বর্তমানে এক কেজি মোটা চাল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগামী বৈশাখে বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম ওঠানামায় থাকতে পারে। তবে চাল ব্যবসায়ীদের দাবি, বৃহৎ করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিরিক্ত মজুতদারি বাজারে সংকট তৈরি করছে। এ নিয়ে সরকারের তেমন নজরদারিও নেই। বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ তাদের। মূল একে অপরের প্রতি দোষারোপের মাধ্যমে চাল নিয়ে আবারও চালবাজি শুরু করেছেন বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই চালের বাজারে চালবাজি শুরু হয়েছে। তবে গত ডিসেম্বর মাসে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যেই, জানুয়ারির মাঝামাঝি (সপ্তাহ) ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে আরও চার থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। অব্যাহত দামবৃদ্ধির কারণ হিসেবে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যকে দায়ী করছেন খুচরা বিক্রেতারা। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মজুত আইনের কঠোর প্রয়োগের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
চালের বাজারে স্বস্তি ফেরাতে গত ২০ অক্টোবর এর ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, রেগুলেটরি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ এবং আগাম কর পাঁচ শতাংশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতেও দাম না কমায় গত ৩১ অক্টোবর চাল আমদানিতে শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেয় সরকার। তবে এর কোনো প্রভাবই নেই বাজারে। আমনের ভরা মৌসুমে চালের ভরপুর সরবরাহ রাজধানীর পাইকারি কিংবা খুচরা মুদিখানায়। তারপরও বিক্রেতারা বলছেন, সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের দাম গত সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে চার থেকে ছয় টাকা। তিন সপ্তাহের হিসাবে যা ঠেকছে ১০ থেকে ১৪ টাকায়। দেশের প্রধান এই খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে সাধারণ মানুষ বলছেন, বাজার কাঠামো ঠিক রাখতে সরকার ব্যর্থ হলে বেকায়দায় পড়বেন ভোক্তারা। নাসিম নামে এক ক্রেতা বলেন, চালের দাম দিনে দিনে বাড়ছেই। যার প্রভাব সব শ্রেণির ভোক্তার ওপরই পড়ছে। মজুতদারদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। আর বিক্রেতাদের দাবি, গত ১৫-২০ দিন ধরে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম। অযৌক্তিক দামের কবল থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে খতিয়ে দেখতে হবে করপোরেট গ্রুপ ও মিলারের গুদাম হিসাব। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৮০ টাকা, আটাইশ ৫৮-৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬-১১৮ টাকায়। তবে বাজারে এই নাজেহাল অবস্থার কথা শিকার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারাও।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, আগামী রমজান সামনে রেখে সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে। তবে সরকারের হাতে কোনো আলাদিনের চেরাগ নেই, যার মাধ্যমে রাতারাতি বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। চালের বাজার নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। বাজারে অন্য কোনো পণ্যে অসঙ্গতি নেই। চাল মজুতেও ঘাটতি নেই। এরপরেও চাল আমদানিতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। আমদানি শুল্ক ৬৩ শতাংশ থেকে  তিন শতাংশে নামানো হয়েছে। এছাড়া এপ্রিল মাসে বোরো ধান উঠলে চালের বাজার স্বাভাবিক হবে। এ অবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণে লোক দেখানো তদারকি ছেড়ে মজুত আইনের কঠোন প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে মজুত আইনের কঠোর প্রয়োগ বর্তমানে সবচেয়ে ভালো উপায়। তা না করে খোঁজ বা ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। দুই-একজন অসাধু মিলারকে শাস্তি দেয়া হলে বাকিরা ভয় পাবে।
মালিকদের কারসাজিতে অস্থির চালের বাজার: রাজধানী ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও হঠাৎ অস্থির হয়ে উঠছে চালের বাজার। পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারেই প্রতি বস্তা (৫০ কেজি ওজনের) চালে ১৫ দিনের ব্যবধানে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর শেষ সপ্তাহে বস্তাপ্রতি কমেছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগামী বৈশাখে বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম ওঠানামায় থাকতে পারে। তবে চাল ব্যবসায়ীদের দাবি, বৃহৎ করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিরিক্ত মজুতদারি বাজারে সংকট তৈরি করছে। এ নিয়ে সরকারের তেমন নজরদারিও নেই। বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ তাদের। চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকার মুদি দোকানি দেলোয়ার হোসেন। কথা হলে তিনি জানান, গত ১৫ দিনের ব্যবধানে চালের দাম অনেক বেড়েছে। রহমান কাটারি (কাটারিভোগ) এখন গত বৃহস্পতিবার বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও দাম ছিল ৮৫ টাকা। মিনিকেট আতপ ছিল ৭০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা। ৮৫ টাকার সেদ্ধ নাজিরশাইলের দাম উঠেছে ৯০ টাকায়। এসময়ে জিরাশাইল সেদ্ধ চালের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে এ চাল ছিল প্রতি কেজি ৭৫ টাকা। এখন বিক্রি করছি ৮২ টাকায়। মিনিকেট সেদ্ধ ছিল ৬০ টাকা। এখন প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকায় উঠেছে, জানান এই খুচরা ব্যবসায়ী। খুচরা বাজারে বাড়লেও পাইকারিতে চালের দাম কমছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। চট্টগ্রাম রাইচ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিক উল্লাহ। তিনি নগরীর চাক্তাই এলাকার মেসার্স রফিক উল্লাহ রাইচ এজেন্সির স্বত্বাধিকারী। এবার সরকারের অনুমতি নিয়ে চালও আমদানি করেছেন তিনি। জিরাশাইল সেদ্ধ চালের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে এ চাল ছিল প্রতি কেজি ৭৫ টাকা। এখন বিক্রি করছি ৮২ টাকায়। মিনিকেট সেদ্ধ ছিল ৬০ টাকা। এখন প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকায় উঠেছে বলে জানান এই খুচরা ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আমন মৌসুমে সারাদেশে বন্যার কারণে ফলন কম হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। এখন ভারত থেকে পর্যাপ্ত চাল আমদানি হয়েছে। কয়েকদিন ধরে চাক্তাইয়ের বাজারে বিক্রি কম। দামও পড়তির দিকে। আমনের ভরা মৌসুমে বড় বড় করপোরেট ব্যবসায়ীরা বেশি করে ধানের মজুত করেছেন। এ কারণে চালের বাজারে স্থিতিশীলতা আসছে না।
সরেজমিনে বিভিন্ন আড়ত ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, গত ১৫ দিন ধরে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিশেষত আমন মৌসুম শেষ হওয়ার পর নতুন মৌসুমের ধান ওঠার মাঝের সময়টাতে বাজারে চালের সংকট তৈরি হয়। বিগত বছরগুলোতেও ওই মাঝের সময়টাতে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠতে দেখা গেছে। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। আমন মৌসুম শেষ হলেও চালের বাজারে ক্রেতাদের জন্য কোনো সুখবর নেই। বলা হচ্ছে, গত আমন মৌসুমে দেশে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে ফলনে প্রভাব পড়েছে। এতে সরকারি পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান-চাল সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য অধিদফতর। দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। সরকারি পর্যায়েও বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানি করা হয়। তবে খাদ্য অধিদফতর বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গত ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে মোট ৩৬ লাখ ৮৯ হাজার ৪০০ টন খাদ্যশস্য আমদানি হয়েছে। যার মধ্যে চাল আমদানি হয়েছে ৩ লাখ ২ হাজার ২৪০ টন। যেখানে সরকারিভাবে ৮৬ হাজার ৮১০ টন আর বেসরকারিভাবে চাল আমদানি হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৩০ টন। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৬৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৭০ টন খাদ্যশস্য আমদানি হয়েছিল।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭৭১ টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এরমধ্যে ৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৮৭ টন চাল, ১৪ হাজার ৩৬৩ টন ধান (চালের আকারে) এবং ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৯ টন গম মজুত রয়েছে।
চাক্তাই ও পাহাড়তলীর চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৫ দিন আগে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজিতে) ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে। এরমধ্যে গত দুই-একদিন ধরে আবার প্রতি বস্তায় ২০০ টাকার মতো কমতে শুরু করলেও পাইকারি আড়তগুলোতে খরিদ্দার কম। চালের দামের এ ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষ নাভিশ্বাস তুলেছে। বিশেষত চট্টগ্রামে চালের অস্বাভাবিক দামে দুর্ভোগ বাড়ছে সীমিত আয়ের মানুষের। চাক্তাইয়ের চালের আড়তদার ব্যবসায়ী মেসার্স সেকান্দার হোসেনের পরিচালক জাহেদুল ইসলাম শাওন বলেন, গতকাল শুক্রবার কাটারিভোগ আতপ ২৫ কেজির বস্তা ২১০০ টাকা, ভালো মানের ২৮-বেতি ৩৪৫০ টাকা, জিরাশাইল সেদ্ধ ৫০ কেজির বস্তা ৪ হাজার টাকা, কাটারি ৩২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে নুরজাহান সেদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ৫০ কেজি ২৭০০ টাকা। তিনি জানান, এসব চালের ভোক্তা সাধারণত সীমিত আয়ের মানুষেরাই। এছাড়া গত ১৫ দিনে আমদানিকৃত ভারতীয় চালের দাম বস্তাপ্রতি এক থেকে দুইশো টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে আমদানিকৃত ভারতীয় চালের দাম বাড়েনি বলে দাবি করেন আমদানিকারক ব্যবসায়ী মেসার্স রফিক উল্লাহ রাইচ এজেন্সির স্বত্বাধিকারী রফিক উল্লাহ। তিনি বলেন, আমি নিজেও চাল আমদানি করেছি। আমদানিমূল্যের সঙ্গে বিক্রি (বিক্রয়মূল্য) মিলছে না। আমদানি করা ভারতীয় চালের দাম বাড়েনি, বরং কমে গেছে। এতে চাল আমদানি করে আমরা লোকসানের মুখে পড়ছি।
চট্টগ্রামে পাইকারি চালের আরেক বড় বাজার পাহাড়তলী বাজার। বাজারটির ব্যবসায়ী ও সমিতির নেতা জাফর উদ্দিন বলেন, চালের দাম বস্তাপ্রতি ৫০-১০০ টাকা করে কমছে। গত এক সপ্তাহ আগে চালের বাজার হু হু করে বেড়েছিল। আমদানিকৃত ভারতীয় চালের দামও বেড়েছিল। দেশি কাটারি আতপ ২৫ কেজি ২১০০ টাকা, রহমান নাজিরশাইল ২১৭৫ টাকা, ২৮-বেতি মানভেদে ২৮৫০ থেকে ৩৪৫০ টাকা ছিল। তিনি বলেন, সরকার বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির জন্য এলসি ওপেন করে দিলেও ডলার সংকটের কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেকে চাল আমদানি করতে পারছেন না। আবার বড় বড় করপোরেট গ্রুপগুলো চাল আমদানি করছে। এক্ষেত্রে তারা ব্যাংকগুলো থেকে শিল্প ক্যাটাগরির ঋণ পাচ্ছে। যে ঋণের সুদহার অনেক কম। কিন্তু আমাদের মতো ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণে সুদহার বেশি। সব মিলিয়ে প্রকৃত চাল ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ভোক্তারাও ঠকছেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স